GBP/USD পেয়ারের 5M চার্টের বিশ্লেষণ
সোমবারও GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের এই অনিশ্চিত নিম্নমুখী মুভমেন্ট তৃতীয়বারের মতো ইচিমোকু সূচকের সেনকৌ স্প্যান B লাইনের সামনে এসে থেমে গেছে—এবং আবারও এটি ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত কয়েকটি ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টগুলো অনেকটাই সেনকৌ স্প্যান B ও কিজুন-সেন লাইনের মাঝখানে ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে হচ্ছে। তবে আমাদের বিশ্বাস, বর্তমান মৌলিক প্রেক্ষাপট এবং মার্কিন ডলারের প্রতি ট্রেডারদের মনোভাব পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ারই সমর্থন দেয়।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত মার্কিন প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল—যেমন JOLTs, ননফার্ম পেরোল, বেকারত্বের হার, এবং পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক—সবই প্রত্যাশার চেয়ে ভালো এসেছে। তাত্ত্বিকভাবে, এতে ডলারের এক সপ্তাহ ধরে মৌলিক প্রেক্ষাপট থেকে সমর্থন পাওয়ার কথা। তবে আবারও ট্রেডাররা মৌলিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে ডলার কিনতে চায়নি। তাহলে এখন ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, যখন এমনকি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও আর এটিকে সমর্থন দিচ্ছে না?
সোমবার যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্র—কোন দেশেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত ছিল না। তাই দিনের প্রথমার্ধে এই পেয়ারের দরপতন কিছুটা বিস্ময়কর ছিল। তাহলে কি কোনো ভিত্তি ছাড়াই ডলারের মূল্য বেড়েছে? তবে দিনের দ্বিতীয়ার্ধে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে।
৫ মিনিটের চার্টে গতকাল দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। 1.3615 লেভেলের আশেপাশে গঠিত সেল সিগন্যালটি খুব একটা নিখুঁত ছিল না, এবং মূল্য সেনকৌ স্প্যান বি লাইনে পৌঁছানোর ৫ পয়েন্ট আগেই থেমে যায়। তবুও, ট্রেডারদের জন্য শর্ট পজিশন ক্লোজ করার সময় ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই লাইনের কাছাকাছি কোনো বাই সিগন্যাল গঠিত হয়নি। পরবর্তী সিগন্যালটি আবারও 1.3615 এর কাছাকাছি গঠিত হয়, তবে এবার বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। আবারও মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়নি। দিনের শেষে, এই পেয়ারের মূল্য আবারও 1.3615 ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, তবে তৃতীয় পজিশন ওপেন করা তখন আর যুক্তিযুক্ত ছিল না।
COT রিপোর্ট
ব্রিটিশ পাউন্ডের COT রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের মনোভাব প্রায়ই পরিবর্তিত হয়েছে। কমার্শিয়াল ও নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন নির্দেশকারী লাল ও নীল লাইন প্রায়ই একে অপরকে অতিক্রম করছে এবং জিরো লাইনের কাছাকাছি রয়েছে। বর্তমানে এই লাইনগুলোও কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা লং ও শর্ট পজিশনের সংখ্যা প্রায় সমান বলেই ইঙ্গিত দেয়। তবে গত দেড় বছরে নেট পজিশনের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
মার্কিন ডলার ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে দুর্বল হচ্ছে, ফলে মার্কেট মেকারদের পাউন্ড কেনার চাহিদা এখন খুব বেশি প্রাসঙ্গিক নয়। বাণিজ্য যুদ্ধ কোনো না কোনোভাবে অব্যাহত থাকবে, এবং ফেডারেল রিজার্ভের মূল সুদের হার ধারণার চেয়েও বেশি কমে যেতে পারে। এর ফলে ডলারের চাহিদা কমতেই থাকবে। সর্বশেষ ব্রিটিশ পাউন্ড সংক্রান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 6,400 টি বাই পজিশন এবং 2,000 টি সেল পজিশন ক্লোজ করেছে। ফলে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন 8,400 কমে গেছে, যার বাস্তবিক গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম।
২০২৫ সালে পাউন্ড উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে, যার প্রধান কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা। একবার এই বিষয়টির প্রভাব ফিকে হয়ে গেলে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে—কিন্তু সেটা কবে হবে তা কেউ জানে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কেবল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সামনে আরও অনেক বড় ঝড় অপেক্ষা করছে।
GBP/USD পেয়ারের বিশ্লেষণ (1H)
১ ঘণ্টার টাইমফ্রেমে গত সপ্তাহের বুধবার GBP/USD পেয়ারের তীব্র দরপতন হয়, তবে আবারও সেখানেই ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম শেষ হয়ে যায়। মার্কেটের ট্রেডাররা মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের সকল ইতিবাচক ফলাফল উপেক্ষা করেছে এবং বরং কেবলমাত্র যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি ঘটনার প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যেখানে চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস বিতর্ক চলাকালীন সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্য আবারও তৃতীয়বারের মতো সেনকৌ স্প্যান B লাইন ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।
৮ জুলাই পর্যন্ত, আমরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো চিহ্নিত করছি: 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3615, 1.3741–1.3763, 1.3833, 1.3886। সেনকৌ স্প্যান B লাইন (1.3578) এবং কিজুন-সেন লাইনও (1.3674) সিগন্যালের উৎস হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য সঠিক দিকে ২০ পয়েন্ট মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
মঙ্গলবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তাই এই পেয়ারের মূল্যের শান্ত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। তবে হোয়াইট হাউস থেকে বিভিন্ন রকম সংবাদ আসছে, এবং নতুন কোনো ঘটনা আবারও ডলারের দরপতন শুরু করতে পারে। অন্যদিকে, বর্তমানে এমন কোনো খবরের প্রত্যাশা নেই যা ডলারকে সমর্থন দিতে পারে।
চার্টের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা:
- গাঢ় লাল লাইন – রেজিস্ট্যান্স/সাপোর্ট লেভেল, যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। এগুলো ট্রেড সিগনালের উৎস নয়।
- কিজুন-সেন এবং সেনকৌ স্প্যান B লাইন – ইচিমোকু সূচকের লাইন, যা 4-ঘণ্টা টাইমফ্রেম থেকে 1-ঘণ্টা টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এগুলো শক্তিশালী লেভেল।
- হালকা লাল লাইন – মূল্য যে চূড়ান্ত পয়েন্টগুলো থেকে পূর্বে বাউন্স করেছে। এগুলো ট্রেড সিগনালের প্রদানকারী লেভেল।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ডলাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল অথবা অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন।
- COT চার্টের ইনডিকেটর 1 – প্রতিটি ক্যাটাগরির ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা নির্দেশ করে।