EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টের বিশ্লেষণ
মঙ্গলবারও EUR/USD পেয়ারের দরপতন ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল, যদিও ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো মৌলিক ব্যাখ্যা ছিল না। এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধুমাত্র জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ওপরই নয়, আরও কিছু দেশের ওপর শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও এসব দেশের অর্থনীতি খুব বেশি বড় নয়—এবং সার্বিয়া বা তিউনিসিয়ার মতো দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রেডারদের কাছ থেকে কোনো দৃশ্যমান প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি—তবুও এটি বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা আরও এক ধাপ বৃদ্ধি করেছে। এদিকে, এখন পর্যন্ত মাত্র 3টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তাই নতুন করে ডলারের দরপতন হওয়াটাই আরও যৌক্তিক হতো।
মঙ্গলবার কোনো ধরনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তাই সামষ্টিক প্রতিবেদনের প্রভাবে ডলার শক্তিশালী হয়েছে এমনটা বলা যাবে না। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ডলারের দর আবারও সামান্য পরিমাণে শক্তিশালী হয়েছে এবং একধরনের কনসোলিডেশন অব্যাহত রেখেছে। ডাউনওয়ার্ড চ্যানেলের ঢাল খুবই সামান্য, এবং এই পেয়ারের মূল্য এই চ্যানেলের সীমানা ঘেঁষেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে। বর্তমানে সেনকৌ স্প্যান B লাইনের দিকে আরও এক ধাপ দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে ডলারের মূল্যের মুভমেন্টের প্যাটার্ন এবং মৌলিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট: পুনরায় এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের সময়, মূল্য 1.1750–1.1772 এরিয়া (কিজুন-সেন লাইন) থেকে রিবাউন্ড করে আবার নিম্নমুখী হয়। এই সময় ট্রেডাররা 1.1666-এর লক্ষ্যমাত্রায় শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন। যদিও এই পেয়ারের মূল্য সেই লক্ষ্যমাত্রা পর্যন্ত পৌঁছায়নি, তবে ট্রেডাররা ম্যানুয়ালি ট্রেড ক্লোজ করার সময় পেয়েছেন ও মুনাফা করতে পেরেছেন।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্টটি ১ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্টে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘ দিন ধরে নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। 2024 সালের শেষ দিকে বিক্রেতারা সাময়িক সময়ের জন্য মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেও তারা দ্রুতই তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কেবল ডলারের দরপতনই হচ্ছে। আমরা শতভাগ নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে ডলারের দরপতন চলতেই থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সেই দিকেই ইঙ্গিত দেয়।
আমরা এখনও ইউরোর পক্ষে ইতিবাচক কোনো মৌলিক প্রেক্ষাপট দেখছি না, তবে এখনও ডলারের দরপতনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি রয়ে গেছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও বিদ্যমান, যদিও গত ১৬ বছরের প্রবণতা এখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। একমাত্র ট্রাম্প কর্তৃক সৃষ্টি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হলে ডলারের পুনরুদ্ধার শুরু করতে পারে—কিন্তু সেটা কবে হবে এবং আদৌ হবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন।
বর্তমানে, লাল এবং নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যার মানে মার্কেটে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপের লং পজিশনের সংখ্যা 1,200 বেড়েছে, এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা 4,800 বেড়েছে। ফলে নেট পজিশনের সংখ্যা 3,600 কমেছে।
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্টের বিশ্লেষণ
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, একটি ডিসেন্ডিং চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে। এর মানে ডলার হয়তো আরও কিছুদিন বিশৃঙ্খলভাবে শক্তিশালী হতে পারে, কিন্তু মধ্যমেয়াদে ডলারের পরিস্থিতি খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ধারাবাহিকভাবে এমন খবর আসছে যা ট্রেডারদের ডলার থেকে দূরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে। এমনকি সামষ্টিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলও কাজে আসছে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের অবস্থানকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এই সপ্তাহে তিনি আরও কয়েকটি দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন, তাই ডলারের মূল্যের বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট হয়তো একটি সাময়িক টেকনিক্যাল কারেকশন—অথবা একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।
৯ জুলাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেল:
- সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স লেভেল: 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534, 1.1615, 1.1666, 1.1750, 1.1846–1.1857
- সেনকৌ স্প্যান B লাইন: 1.1642
- কিজুন-সেন লাইন: 1.1750
উল্লেখ্য: ইচিমোকু সূচকের লাইনসমূহ দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণ করার সময় তা বিবেচনায় রাখতে হবে। এই পেয়ারের মূল্য সঠিক দিকে 15 পয়েন্ট এগোলেই ব্রেকইভেনে স্টপ লস অর্ডার সেট করতে ভুলবেন না, যা ভুল সিগন্যালের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেবে।
বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো বড় ধরনের ইভেন্ট বা উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই। ফলে সম্ভবত ডিসেন্ডিং চ্যানেলের মধ্যেই এই পেয়ারের ট্রেডিং সীমাবদ্ধ থাকবে। সন্ধ্যায়, ফেডারেল রিজার্ভের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হবে, তবে এটি একটি আনুষ্ঠানিক নথি এবং এতে সাধারণত ট্রেডারদের জন্য কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য থাকে না।
চার্টের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা:
- গাঢ় লাল লাইন – রেজিস্ট্যান্স/সাপোর্ট লেভেল, যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। এগুলো ট্রেড সিগনালের উৎস নয়।
- কিজুন-সেন এবং সেনকৌ স্প্যান B লাইন – ইচিমোকু সূচকের লাইন, যা 4-ঘণ্টা টাইমফ্রেম থেকে 1-ঘণ্টা টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এগুলো শক্তিশালী লেভেল।
- হালকা লাল লাইন – মূল্য যে চূড়ান্ত পয়েন্টগুলো থেকে পূর্বে বাউন্স করেছে। এগুলো ট্রেড সিগনালের প্রদানকারী লেভেল।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ডলাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল অথবা অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন।
- COT চার্টের ইনডিকেটর 1 – প্রতিটি ক্যাটাগরির ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা নির্দেশ করে।