সান টাওয়ার (চীন)

সান টাওয়ার হল ৫০-মিটার উঁচু সাংস্কৃতিক নিদর্শন যা ২০২৩ সালে উত্তর-পূর্ব চীনের ইয়ানটাই উপকূলে নির্মিত হয়। ওপেন আর্কিটেকচারের ডিজাইন করা এই টাওয়ারটি কংক্রিটের প্যানেল ও চোখে পড়ার মতো শঙ্কু আকৃতির। এর ভেতরে প্রদর্শনী স্থান, উন্মুক্ত অ্যাম্ফিথিয়েটার, পাঠাগার, ক্যাফে এবং অবজারভেশন ডেক রয়েছে। বাতিঘরের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই টাওয়ারটি একটি দৈত্যাকার সূর্যঘড়ির কাজও করে, যা সূর্যের চলাচলের সাথে মিথস্ক্রিয়ায় নিজেকে উপস্থাপন করে।

ক্যাকটাস টাওয়ারস (ডেনমার্ক)

ক্যাকটাস টাওয়ারস হল দুটি আবাসিক আকাশচুম্বী ভবন যা ২০২৪ সালে কোপেনহেগেনে নির্মিত হয়, যা BIG নামক আর্কিটেকচার ফার্ম ডিজাইন করেছেন। ৮০ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই টাওয়ারগুলো একটি উঁচু পাবলিক পার্ক দিয়ে সংযুক্ত। এগিলোর ঘূর্ণায়মান ফ্লোরের নকশা ভবনকে “কাঁটার মতো” আকৃতি দেয়, যা প্রকল্পটির নামের মূল অনুপ্রেরণা। ৪৯৫টি অ্যাপার্টমেন্টের প্রতিটিতে একটি করে ব্যক্তিগত বারান্দা রয়েছে, যা একটি কেন্দ্রীয় সার্কুলেশন কোর ঘিরে সাজানো। আরও সুবিধার মধ্যে রয়েছে ক্যাফে, ফিটনেস সেন্টার এবং টেরেস।

অকল্যান্ড টাওয়ার (যুক্তরাজ্য)

অকল্যান্ড টাওয়ার হল একটি ২৯-মিটার উঁচু কাঠের অবজারভেশন টাওয়ার যা ২০১৮ সালে বিশপ অকল্যান্ডে নির্মিত হয়, যার ডিজাইন করেছেন নাইল ম্যাকলাফলিন আর্কিটেক্টস। এটি অকল্যান্ড ক্যাসলের প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করে, যেখানে রয়েছে একটি টিকিট অফিস, তথ্যকেন্দ্র এবং ১৫ মিটার উঁচু পর্যবেক্ষণ ডেক। এর নকশা মধ্যযুগীয় অবরোধ যন্ত্র থেকে অনুপ্রাণিত, যা ইউরোপীয় লার্চ কাঠের খোলা কাঠামোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই টাওয়ারটি ব্যবহারিক এবং প্রতীকী — একসময় ব্যক্তিগত এই প্রাসাদ এলাকাকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রতীক এটি।

ডান্স অব লাইট (চীন)

ডান্স অব লাইট হল একটি ১৮০-মিটার আকাশচুম্বী অফিস ভবন যা ২০২২ সালে চংকিং-এ নির্মিত হয়, যা Aedas-এর ডিজাইনে নির্মিত হয়েছে। ভবনটির নাম এসেছে এর ফ্যাসাদ ডিজাইন থেকে, যা অরোরা বোরিয়ালিসের রূপ থেকে অনুপ্রাণিত। এর সবচেয়ে চোখধাঁধানো বৈশিষ্ট্য হলো দুটি ডাবল-কার্ভড কাচের পৃষ্ঠ, যা প্রতিটি ফ্লোরে সর্বোচ্চ ৮.৮ ডিগ্রি পর্যন্ত মোচড় খায় — এটিকে বিশ্বের অন্যতম মোচড়ানো টাওয়ারে পরিণত করেছে। ঠান্ডায় বেঁকানো কাচের ব্যবহারে পুরো ফ্যাসাদে একটি মসৃণতা ও আলোর খেলা তৈরি হয় সারাদিন জুড়ে।

কারভেন টাওয়ার (সুইডেন)

কারভেন টাওয়ার হল একটি ১২-মিটার উঁচু অবজারভেশন টাওয়ার যা ২০২৪ সালে Getterön Nature Reserve-এ নির্মিত হয়, যা ডিজাইন করেছেন White Arkitekter। এতে ১৪০টি কাঠের বিম ধাতব রিং দিয়ে সংযুক্ত হয়ে একটি হাইপারবোলয়েড কাঠামো তৈরি করেছে — যা দেখতে "মোচড়ানো খড়কুটোর" মতো। ভিতরে একটি সর্পিল সিঁড়ি পর্যবেক্ষণ ডেকে নিয়ে যায়, যেখান থেকে পার্শ্ববর্তী প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়। প্রকল্পটিতে ব্যবহৃত হয়েছে প্যারামেট্রিক মডেলিং, যার ফলে জটিল জ্যামিতিক কাঠামোটি সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

ওয়ান রিভার নর্থ (যুক্তরাষ্ট্র)

ওয়ান রিভার নর্থ হল একটি ১৬-তলা আবাসিক ভবন, যা ২০২৪ সালে ডেনভারে নির্মিত হয়েছে, যা ম্যাড আর্কিটেকচার নামক প্রতিষ্ঠান ডিজাইন করেছে। ভবনটির সবচেয়ে নজরকাড়া দিক হলো এর ব্যতিক্রমধর্মী ফ্যাসাদ — কাচের আবরণে একটি বাঁকা ফাটলের মতো চেরা অংশ, যা দেখতে যেন প্রাকৃতিক পাথরের ফাটল। এই চারতলা ভবনের উন্মুক্ত অংশে রয়েছে গাছপালা, ঝর্ণা ও বিশ্রামের স্থান, যা একটি পাহাড়ি ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে হাঁটার অনুভূতি দেয়। ছাদে রয়েছে সুইমিং পুল, স্পা এবং একটি বাগান, যেখান থেকে শহর ও রকি পর্বতমালার দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

ত্রি হিতা করণা টাওয়ার (ইন্দোনেশিয়া)

ত্রি হিতা করণা টাওয়ার হল একটি ৩০-মিটার উঁচু পর্যবেক্ষণ টাওয়ার যা ২০২৪ সালে ন্যানির উপকূলে নির্মিত হয়, যা স্থপতি আর্থার মামু-মানি ডিজাইন করেছেন। এর কাঠামো বালিনিজ দর্শন "মানব, প্রকৃতি ও আত্মার মধ্যে সামঞ্জস্য" ধারণাকে প্রতিফলিত করে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে উলিন কাঠের মজবুত বিম এবং নমনীয় বেত, যার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে একটি হালকা ওজনের সর্পিল গঠন। রাতের বেলায় এই টাওয়ারটি একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ আর্ট স্পেসে পরিণত হয়, যেখানে AI-নির্ভর প্রজেকশনের মাধ্যমে বালিনিজ সংস্কৃতির মূল্যবোধ তুলে ধরা হয়।