ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের প্রতি সুদের হার কমানোর আহ্বান নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন—এবার তিনি বলছেন, এই পদক্ষেপ সরকারের ঋণ খরচ কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফেডের বৈঠকের আগে, প্রেসিডেন্ট জেরোম পাওয়েলের ওপর চাপ দিতে শুরু করেন, যাতে তিনি বর্ধিত ট্যারিফের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া অর্থনীতিকে সমর্থন দেন। এখন ট্রাম্প দাবি করছেন, সুদের হার কমানো প্রয়োজন কারণ এটি এখন বিশাল ফেডারেল বাজেট ঘাটতির অন্যতম প্রধান চালক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ট্রেজারি বিভাগের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে ফেডারেল ঋণের সুদের খাতে সরকারের ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় $776 বিলিয়ন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭% বেশি। এটি ১৯৯০ এর দশকের পর সর্বোচ্চ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পরিমাণ খরচ—যা এখন প্রতিরক্ষা খরচকেও ছাড়িয়ে গেছে—এর পেছনে রয়েছে কোভিড-পরবর্তী ব্যয়, ট্যাক্স কাট, এবং ফেডের উচ্চ সুদের হারের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি। মুডিজ রেটিংস তাদের সাম্প্রতিক মার্কিন ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেডে এই ঋণ খরচ বৃদ্ধিকেই অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

হোয়াইট হাউজে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, "আমি চাই এই লোকটা সুদের হার কমাক, নাহলে আমাদের প্রচুর টাকা দিতে হবে।" তিনি দাবি করেন, ফেড যদি ২ শতাংশ পয়েন্ট সুদের হার কমায়, তাহলে বছরে প্রায় $600 বিলিয়ন সুদের খরচ সাশ্রয় হবে।

তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে দিয়েছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থনৈতিক অবস্থা যদি তা সমর্থন না করে, তাহলে সুদের হার কমালে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা দেখা দেবে। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের কারণে তেলের দাম বাড়ার ঝুঁকি থাকায়, সুদের হার অপরিবর্তিত রাখাই যৌক্তিক বলে মনে করছেন অনেকে। জেপিমর্গ্যান চেজ অ্যান্ড কো-এর বিশ্লেষকেরা বলেন, "যদি এটি অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে তা উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং পরবর্তী সময়ে আরও বেশি নমিনাল সুদের হারে পরিণত হবে।"

ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট প্রথমে বলেছিলেন, তিনি ও ট্রাম্প মূলত ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের ইয়িল্ড নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু পরে ট্রাম্প আবার তার পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যান—ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমাতে হবে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, সরকার যে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে তা এখন পুনঃঅর্থায়নের সময় এসেছে এবং আগের তুলনায় অনেক বেশি খরচে করতে হবে। ২০২০ সালে কোভিড রিলিফ প্যাকেজের জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছিল, যার একটি বড় অংশ এখন পরিশোধযোগ্য হয়ে পড়েছে। নমুরা হোল্ডিংস-এর এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বছরের শেষে $7 ট্রিলিয়নের বেশি মার্কিন ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আসবে।

এই প্রবণতা মার্কিন ডলারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ সুদের হারের কারণে মন্দার আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের মার্কিন বন্ড ও সার্বভৌম ঋণ থেকে দূরে রাখছে।

EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
বর্তমানে ক্রেতাদের অবশ্যই 1.1540 লেভেলের উপরে মূল্য ঠেলতে হবে। তবেই 1.1580 টেস্টের পথ উন্মুক্ত হবে। এর পর 1.1630 এর দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হতে পারে, যদিও বড় খেলোয়াড়দের সহায়তা ছাড়া তা কঠিন। সবচেয়ে দূরের লক্ষ্য হলো 1.1700 লেভেল। পতনের ক্ষেত্রে আমি 1.1500 লেভেলের আশেপাশে প্রধান ক্রেতাদের সক্রিয়তা আশা করি। যদি সেখানে কোনো চাহিদা দেখা না যায়, তাহলে 1.1455 বা 1.1405 লেভেলের কাছাকাছি লং পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে।

GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
পাউন্ড ক্রেতাদের অবশ্যই 1.3475 এর কাছাকাছি রেজিস্ট্যান্স পুনরুদ্ধার করতে হবে। তবেই 1.3505 পর্যন্ত অগ্রগতি সম্ভব হবে, যদিও এই লেভেল অতিক্রম করা কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরের লক্ষ্য হলো 1.3533। পতনের ক্ষেত্রে 1.3430 লেভেলে বেয়াররা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে 1.3390 এবং পরবর্তীতে 1.3343 পর্যন্ত পতন ঘটতে পারে।