EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টের বিশ্লেষণ
বুধবার পূর্বাভাস অনুযায়ী একটি ডাউনওয়ার্ড চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের দুর্বল মুভমেন্ট চলমান ছিল। তবে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে আসে, টানা তৃতীয় দিনের মতো কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল না, এবং মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণা উপেক্ষা করেছে।
এই বিশ্লেষণে প্রথমেই যেটি স্পষ্ট করা প্রয়োজন সেটা হল ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কগুলো এখনো কার্যকর হয়নি বা শুল্ক বাড়ানোও হয়নি। হ্যাঁ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারও শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিয়েছেন—এবারের লক্ষ্যবস্তু হলো তামা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং আরও কিছু পণ্য। তিনি ইতোমধ্যে তার "ব্ল্যাকলিস্টে" থাকা 15টি দেশের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছেন। তবে বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর নতুন শুল্ক কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে, এবং এর আগেই ট্রাম্প আরও কয়েকবার তার অবস্থান পরিবর্তন করতে পারেন। খাতভিত্তিক শুল্কের ক্ষেত্রেও তিনি এখনো শুধু শুল্ক বৃদ্ধির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করেননি। তাই প্রথমত, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, দ্বিতীয়ত, এই মুহূর্তে ট্রেড করার মতো কোনো অনুঘটকও নেই।
আমরা আগেও বলেছি এবং এখনো মনে করি যে, সামনে নিকট ভবিষ্যতে মার্কিন ডলারের বড় ধরনের মূল্য বৃদ্ধির বাস্তব কোনো সম্ভাবনা নেই, এবং গত দেড় সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এই দৃষ্টিভঙ্গিকেই নিশ্চিত করছে। ডলারের দর কেবলমাত্র টেকনিক্যাল কারণে বাড়ছে; এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা খুবই দুর্বল হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে, এবং গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন শ্রমবাজার এবং কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ইতিবাচক ফলাফলও উপেক্ষা করেছে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার কোনো ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়নি। এই পেয়ারের মূল্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেভেল বা লাইনের কাছেও যায়নি, এবং অস্থিরতার মাত্রা মাত্র 40 পয়েন্টে সীমাবদ্ধ ছিল।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্টটি ১ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্টে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘ দিন ধরে নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। 2024 সালের শেষ দিকে বিক্রেতারা সাময়িক সময়ের জন্য মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেও তারা দ্রুতই তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কেবল ডলারের দরপতনই হচ্ছে। আমরা শতভাগ নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে ডলারের দরপতন চলতেই থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সেই দিকেই ইঙ্গিত দেয়।
আমরা এখনও ইউরোর পক্ষে ইতিবাচক কোনো মৌলিক প্রেক্ষাপট দেখছি না, তবে এখনও ডলারের দরপতনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি রয়ে গেছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও বিদ্যমান, যদিও গত ১৬ বছরের প্রবণতা এখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। একমাত্র ট্রাম্প কর্তৃক সৃষ্টি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হলে ডলারের পুনরুদ্ধার শুরু করতে পারে—কিন্তু সেটা কবে হবে এবং আদৌ হবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন।
বর্তমানে, লাল এবং নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যার মানে মার্কেটে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপের লং পজিশনের সংখ্যা 1,200 বেড়েছে, এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা 4,800 বেড়েছে। ফলে নেট পজিশনের সংখ্যা 3,600 কমেছে।
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্টের বিশ্লেষণ
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা একটি ডিসেন্ডিং চ্যানেল থেকে সমর্থন পাচ্ছে। অতএব, স্বল্পমেয়াদে ডলারের দর আরও কিছুটা বাড়তে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটির আবারও দরপতন হতে পারে। মার্কিন সংবাদের পটভূমি ট্রেডারদের বারবার ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বলছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান মুভমেন্ট কেবল একটি টেকনিক্যাল কারেকশন বলেই মনে হচ্ছে। ডিসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে, পুনরায় ইউরোর দর বৃদ্ধির জন্য টেকনিক্যাল ভিত্তি তৈরি হবে।
10 জুলাইয়ে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলসমূহ হল:
1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534, 1.1615, 1.1666, 1.1750, 1.1846–1.1857, সেইসাথে সেনকৌ স্প্যান B লাইন (1.1642) এবং কিজুন-সেন লাইন (1.1741) রয়েছে। দ্রষ্টব্য: ইচিমোকু সূচকের লাইনসমূহ দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণ করার সময় তা বিবেচনায় রাখতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ: এই পেয়ারের মূল্য সঠিক দিকে 15 পয়েন্ট এগোলেই ব্রেকইভেনে স্টপ লস অর্ডার সেট করতে ভুলবেন না, যা ভুল সিগন্যালের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেবে।
বৃহস্পতিবার, ইইউ-তে তুলনামূলকভাবে এই সপ্তাহের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে সেটি এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে হচ্ছে। জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ, তবে গত কয়েক মাসে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় 2%-এর আশেপাশে স্থিতিশীল রয়েছে, যার ফলে এটি এখন আর ইসিবির সিদ্ধান্তে তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না। একইসাথে, বর্তমানে ইসিবির নীতিগত সিদ্ধান্তগুলো ইউরোর ওপরও খুব একটা প্রভাব ফেলছে না, কারণ ডলার টানা ছয় মাস ধরে দরপতনের শিকার হচ্ছে।
চার্টের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা:
- গাঢ় লাল লাইন – রেজিস্ট্যান্স/সাপোর্ট লেভেল, যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। এগুলো ট্রেড সিগনালের উৎস নয়।
- কিজুন-সেন এবং সেনকৌ স্প্যান B লাইন – ইচিমোকু সূচকের লাইন, যা 4-ঘণ্টা টাইমফ্রেম থেকে 1-ঘণ্টা টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এগুলো শক্তিশালী লেভেল।
- হালকা লাল লাইন – মূল্য যে চূড়ান্ত পয়েন্টগুলো থেকে পূর্বে বাউন্স করেছে। এগুলো ট্রেড সিগনালের প্রদানকারী লেভেল।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ডলাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল অথবা অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন।
- COT চার্টের ইনডিকেটর 1 – প্রতিটি ক্যাটাগরির ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা নির্দেশ করে।